এম আর সজিব সুনামগঞ্জ থেকে :
৮ জুলাই সোমবার বাদ আসর ওয়েজখালীস্থ জমিয়তের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে যুব জমিয়ত বাংলাদেশ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার বর্তমান কমিটির সভাপতি, এরশাদ খান আল হাবীব সাধারণ সম্পাদক সালিক আহমদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ওয়েস আহমদ সহ জেলা কমিটি দায়িত্বশীল এবং তৃনমুল পর্যায়ের শতাধিক নেতা কর্মী গণপদত্যাগ করেন।
সাংবাদিকগন : গণপদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে জেলা সাধারণ সম্পাদক, সালিক আহমদ লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।লিখিত বক্তব্যে সালিক আহমদ জেলার সিনিয়র দায়িত্বশীলদের বিষয়ে বিভিন্ন
অনিয়ম স্বজন প্রীতি সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ উপস্থাপন করেন। সম্পাদকের লিখিত বক্তব্যের অংশবিশেষ নিম্ন রুপ।
১- আমাদের মুল সংগঠন জমিয়তেউলামায়ে ইসলাম, তারই অংঘ সংগঠন যুব জমিয়তের জেলা মুরুব্বিদের তত্বাবধানেই চলে আসছিল দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমান
জেলা জমিয়ত সভাপতি / সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক সহ কয়েকজন সিনিয়র দায়িত্বশীল উনারা নিজে স্বার্থ
রক্ষার জন্য একটি সফল সংগঠন যুব জমিয়তকে প্রায় বিলুপ্তির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আপনারা অবশ্যই অবগত আছেন যে দে-শ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে জেলা যুব জমিয়ত
সুনামগঞ্জের রাজপথে ছিলো সোচ্চার। ( উকাবে রাসুল সাঃ সম্মেলন – আজমতে সাহাবা সম্মেলন সহ দেশের রাজনৈতিক সংকটে, প্রতিটি কর্মসুচি পালনে যুব জমিয়ত অগ্রনি ভুমিকা পালন করছে।
২-আমাদের বর্তমান জেলা কমিটি বিগত ৬ জুন পাবলিক লাইব্রেরি হল রুমে কাউন্সিল
ও কর্ম সম্মেলনের আয়োজন করে আমাদের
প্রচারনা চলাকালীন সময়ে জেলা জমিয়ত
সহ সভাপতি মাওলানা মুশতাক আহমদ
ও ত্বাহা হোসাইন সহ একটি বিশেষ মহল কাউন্সিল বানচালের চক্রান্ত শুরু করে।
যার ফলে ৬ তারিখ প্রোগ্রামের দিন জেলা সভাপতি ও সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আমাদের বাধ্য করেন কাউন্সিল স্থগিত করতে। এভাবে দু’টি আয়োজনকৃত কাউন্সিল অবৈধ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে স্থগিত করেন উনারা। আমারা দলের স্বার্থে তাদের অযুক্তিক আদেশ মেনে নিয়ে ছিলাম।
৩-দ্বিতীয় আয়োজনকৃত কাউন্সিল স্থগিত ঘোষণার পর,উনারা জেলা জমিয়তের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা রফিক আহমদ উলাশ নগরীকে কাউন্সিল বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। দলের স্বার্থে তাদের এই সিদ্ধান্তও আমরা মেনে নেই।
৪-জেলা জমিয়তের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা রফিক আহমদ কাউন্সিল বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক হওয়ার পর
আমাদের রানিং জেলা কমিটি দায়িত্বশীলদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ
বা সমন্বয় না করে ছাত্র জমিয়তের একজন দায়িত্বশীল হাফিজ ত্বাহার পরামর্শেই
কাউন্সিলের প্রচারণা করেন।
পরবর্তীতে আমরা যখন উনাকে প্রশ্ন করলাম
কাউন্সিল যুব জমিয়তের ছাত্র জমিয়ত কর্মী ত্বাহাকে কেন এতো অগ্রাধিকার দিচ্ছেন? ৬ সদস্য বিশিষ্ট বাস্তবায়ন কমিটির দায়িত্বশীলদের সহযোগিতা নিনিন প্রয়োজনে আমাদের আদেশ করেন! আমরা আপনাকে সহযোগিতা করবো তখন তিনি আমাদেরকে বললেন তোমরা আমাকে অহেতুক সন্দেহ করছো। হাফিজ ত্বাহা হোসাইন যুব জমিয়তের কোন এক ইউনিটের সাধারণ সদস্যও না সুতরাং তাঁকে নিয়ে তোমাদের চিন্তা কোন কারণ নেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যুব জমিয়তের রানিং দায়িত্বশীল থেকে আসন্ন কাউন্সিলে সভাপতি – সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে
আমার উনার এমন বক্তব্য বিশ্বাস করে
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ – জগন্নাথপুর উপজেলা সহ কয়কটি উপজেলায় সাংগঠনিক সফরে সহযোগিতা করি। ৫-কাউন্সিলের দিন ৬ জুলাই কেন্দ্রীয় মেহমান ও জেলার শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতে তৃনমুল পর্যায়ের কর্মীদের
দাবীতে সিদ্ধান্ত হয়। কাউন্সিল হবে
লিখিত ভোটের মাধ্যমে ভোটার হবেন প্রত্যেক উপজেলা শাখার সভাপতি সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক ।আমি আমরা যখন ভোট দিতে গেলাম তখন অবাক হয়ে গেলাম
নির্বাচন কমিশন জেলা সভাপতি তফাজ্জল হক আজিজ সাধারণ সম্পাদক তৈয়্যবুর রহমান চৌধুরীর ও সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক আহমদ গংদের কার্যক্রম দেখে হতবাক উনারা ভোট গ্রহন করছেন
মৌখিক ভাবে!! এবং হাফিজ ত্বাহাকে সভাপতি পদে প্রস্তাব করার জন্য রফিক আহমদ উলাশ নগরী ভোটারদের উৎসাহিত করছেন। উনাদের এই অসাংবিধানিক দেখে,
তাদের এই অযুক্তিক ভোট গ্রহণ পদ্ধতিকে
আমরা প্রত্যাখান করে, মাওলানা এরশাদ খান আল হাবিবকে সভাপতি সালিক আহমদকে সাধারণ সম্পাদক ও মাওলানা ওয়েস আহমদকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে
৫১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা যুব জমিয়তের
কমিটি ঘোষণা করি।৬- আমাদের কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে তারিখ ছিলো বিগত ৩ জুলাই আমরা পাবলিক লাইব্রেরি হল রুম বুকিং দিয়েছি বৈধভাবে, তখন আমাদের প্রতিপক্ষ কমিটির সভাপতি ত্বাহা হোসাইনও
হল রুম বুকিং না দিয়েই অভিষেকঅনুষ্ঠানের
নামে আরকেটি পোস্ট তার আইডি থেকে পোস্ট করেন।একিই দিনে এক হলে দুটি প্রোগ্রাম দেখে জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আমাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন দীর্ঘআলোচনা করেন। এবং দলের স্বার্থে আমাদের কিছু
প্রস্তাব / দাবী উপস্থাপন করার পর। উনারা আমাদেরকে বলেন আমরা তোমাদের দাবী নিয়ে শীর্ষ দায়িত্বশীলদের নিয়ে আলোচনা করবো। আপাতত তোমাদের প্রোগ্রামের প্রচরণা সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত ঘোষণা করো আমরা উনাদের আদেশ পালন করি।
কয়েক ঘন্টা পর জেল জমিয়ত সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তৈয়্যুবুর রহমান চৌধুরী বলেন। তোমাদের সকল দাবী মানা সম্ভব হবে না! তবে হাফিজ ত্বাহা হোসাইনকে
সভাপতি পদ থেকে বাদ দিয়ে সিনিয়র একজনকে সভাপতি নিযুক্ত করলে চলবে কি? তখন আমরা বলি দলের স্বার্থে আপনাদের যেকোনো সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে বাধ্য। তখন জেলা সম্পাদক বললেন
কালপরশু আমরা তাদেরকে নিয়ে বসবো
প্রয়োজনে তোমাদেরকেও তলব করবো
আমরা অপেক্ষা রইলাম কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করলেন না? অবশেষে জেলা জমিয়ত সম্পাদক কে বার বার কল দেওয়ার পর কল রিসিভ করে তিনি আমাদরকে বলেন তোমাদের সাথে কোন বৈঠক বা আলোচনার কোন প্রয়োজন নেই। তোমাদের যা ইচ্ছে তাই করো। জেলা জমিয়তের সিনিয়র এই নেতার এমন আচরণে আমদের দিলে মারাত্মক আঘাত করে, পরিশেষে জেলা যুব জমিয়তের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির দায়িত্বশীল সহ তৃনমুল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে সংগঠনের সিনিয়র নেতাদের আচরণ কথায় কাজে কোন মিল নেই তারা তাদের কাছে দলের চাইতে নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই মুল উদ্দেশ্য, এদের সাথে রাজনীতি করে
দেশ জাতির কল্যাণ করা সম্ভব হবে না ।
এজন্যই আমারা আজ শতাধিক নেতা কর্মী পদত্যাগ করছি।